সম্প্রতি মার্ক জাকারবার্গ তার প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে রেখেছেন ‘মেটা’। মূলত ‘মেটাভার্স’-এর সংক্ষিপ্ত রূপই এই নতুন নাম মেটা।
নাম প্রবর্তনের দিনে ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন ফেসবুকের সহ প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। এ চিঠিতে তিনি মেটাভার্স আসলে বিশ্বকে কতটা বদলে দিতে পারে তার সংক্ষিপ্ত রূপ তুলে ধরেছেন।
জাকারবার্গের চিঠি
আমি যখন ফেসবুক শুরু করি, বেশিরভাগই ওয়েবসাইটে টেক্সট টাইপ করতাম। আমরা যখন ক্যামেরাসহ ফোন পেয়েছি, তখন ইন্টারনেট, মোবাইলফোন আরও বেশি ভিজ্যুয়াল হয়ে উঠেছে। কানেকশনস্ দ্রুততর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও অভিজ্ঞতা শেয়ার করার একটি সমৃদ্ধ পদ্ধতি হয়ে উঠেছে। আমরা ‘ডেস্কটপ টু ওয়েব টু মোবাইল’ কিংবা ‘টেক্সট টু ফটো টু ভিডিও’-তে চলে এসেছি। কিন্তু এটাই শেষ নয়। পরবর্তী প্ল্যাটফরমটি আরও বেশি গুরুত্ববহ। আমরা শুরু করতে যাচ্ছি এমন এক প্ল্যাটফরম নাম মেটাভার্স। এ সংস্থার অধীনেই আমাদের তৈরি প্রতিটি পণ্য ও সেবা থাকবে। মেটাভার্সের সংজ্ঞায়িত গুণটি হবে উপস্থিতির অনুভূতি-যেমন আপনি অন্য ব্যক্তির সঙ্গে বা অন্য জায়গায় আছেন। অন্য ব্যক্তির সঙ্গে সত্যিকারের উপস্থিত বোধ করা সামাজিক প্রযুক্তির চূড়ান্ত স্বপ্ন। এ কারণেই আমরা এটি নির্মাণের দিকে মনোনিবেশ করছি। আপনি কল্পনা করতে পারেন এমন প্রায় সবকিছু মেটাভার্সে করতে পারবেন। বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে একত্র হওয়া, কাজ করা, শেখা, খেলা, কেনাকাটা করা, নির্মাণ করা এবং সেই সঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা থাকবে। এই ভবিষ্যতে, আপনি অফিসে যাতায়াত ছাড়াই, বন্ধুদের সঙ্গে কনসার্টে বা আপনার বাবা-মায়ের বসার ঘরে থাকা অবস্থায় হলোগ্রাম হিসাবে তাৎক্ষণিকভাবে টেলিপোর্ট করতে সক্ষম হবেন। মেটাভার্স কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানি দ্বারা তৈরি হবে না। এটি নির্মাতা এবং ডেভেলপারদের দ্বারা নির্মিত হবে যারা নতুন অভিজ্ঞতা এবং ডিজিটাল আইটেম তৈরি করবে। এই জার্নিতে আমাদের ভূমিকা হলো মৌলিক প্রযুক্তির উন্নতি, সামাজিক প্ল্যাটফরম এবং সৃজনশীল সরঞ্জামগুলোর বিকাশকে ত্বরান্বিত করা যাতে মেটাভার্সকে প্রাণবন্ত করা যায় এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তিগুলো ছড়ানো যায়। আমরা বিশ্বাস করি, আজকে বিদ্যমান যে কোনো কিছুর চেয়ে মেটাভার্স ভালো সামাজিক অভিজ্ঞতা দিবে এবং আমরা এর সম্ভাব্যতা অর্জনে সহায়তা করার জন্য আমাদের শক্তি উৎসর্গ করব। ‘আমরা অর্থ উপার্জনের জন্য সার্ভিস তৈরি করি না বরং আমরা আরও ভালো সার্ভিস বা সেবা তৈরি করার জন্য অর্থ উপার্জন করি।’ আমি বিশ্বাস করি যে, ভোক্তাদের পছন্দের অভাব এবং ডেভেলপারদের জন্য উচ্চ ফি উদ্ভাবনকে দমিয়ে দিচ্ছে এবং ইন্টারনেট অর্থনীতিকে আটকে রেখেছে। আমরা একটি ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত যা তৈরি করেছি তার জন্য আমি গর্বিত, এবং পরে যা আসছে তা নিয়ে আমি উদ্দীপ্ত। আর পরবর্তী অধ্যায় তৈরি করতে বিশ্বের অন্য যে কোনো কোম্পানির চেয়ে বেশি শক্তি উৎসর্গ করছি। আপনি যদি এ ভবিষ্যৎ দেখতে চান, আমি আশা করি আপনি আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।